আর্জেন্টিনা এবং প্যারাগুয়ের যুদ্ধ, যা আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল এবং উরুগুয়ে বনাম প্যারাগুয়ের দারুণ যুদ্ধ হিসাবেও পরিচিত, ১৮৬৪ থেকে ১৮৭০ সাল পর্যন্ত চলেছিল এবং এটি লাতিন আমেরিকার ইতিহাসে অন্যতম ধ্বংসাত্মক সংঘর্ষে পরিণত হয়। যুদ্ধের ফলাফল সমস্ত অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর জন্য, বিশেষ করে প্যারাগুয়ের জন্য, ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনে, যেখানে মানবিক ও অর্থনৈতিক উভয়ই সম্পদে বিশাল ক্ষতি হয়।
সংঘাতের মূল কারণগুলো প্যারাগুয়ে এবং তার প্রতিবেশী দেশের মধ্যে চাপযুক্ত সম্পর্কগুলোর মধ্যে পাওয়া যায়। অঞ্চলের রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক প্রভাবের জন্য প্রতিযোগিতা এবং বাণিজ্যিক পথে নিয়ন্ত্রণের জন্য যুদ্ধের উদ্দীপক হয়ে দাঁড়ায়।
যুদ্ধ ১৮৬৪ সালে শুরু হয়, যখন প্যারাগুয়ে ব্রাজিলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে, এবং পরে আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে, যা উরুগুয়ে তার স্বার্থগুলোর জন্য ছিল। সংঘর্ষটি কয়েকটি মূল পর্যায়ে বিভক্ত:
১৮৬৪ সালের শেষের দিকে প্যারাগুয়ে উরুগুয়ে সংঘর্ষে ব্রাজিলীয় বাহিনীর হস্তক্ষেপের জন্য ব্রাজিলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। ব্রাজিল এবং উরুগুয়ের চাপের কারণে, আর্জেন্টিনা ১৮৬৫ সালে প্যারাগুয়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।
প্রথম বড় সংঘর্ষটি ছিল ১৮৬৫ সালে কুরুপাইতে যুদ্ধ, যেখানে প্যারাগুয়ের সেনাবাহিনী ব্রাজিলীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করে। কিন্তু পরবর্তীতে সংঘর্ষগুলো, যেমন ১৮৬৬ সালের তুইউটিতে যুদ্ধ, জোটবদ্ধ বাহিনীগুলোর শক্ত প্রতিরোধকে প্রদর্শন করে, যার ফলে প্যারাগুয়ের জন্য বড় ক্ষতি হয়।
সময়ের সাথে সাথে যুদ্ধটি আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে থাকে। ১৮৬৮ সালে জোটবদ্ধ বাহিনী প্যারাগুয়ের রাজধানী আসুনসিও দখল করে। এর পর প্যারাগুয়ের সেনাবাহিনী শত্রুর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ চালাতে বাধ্য হয়।
যুদ্ধ ১৮৭০ সালে ফ্রান্সিস্কো সোলানো লোপেজের মৃত্যুর সঙ্গে শেষ হয় এবং প্যারাগুয়ের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে। সংঘাতের ফলাফলগুলো ভয়াবহ ছিল:
যুদ্ধ আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিলের উপরও গভীর প্রভাব ফেলে:
আর্জেন্টিনা এবং প্যারাগুয়ের যুদ্ধ লাতিন আমেরিকার ইতিহাসে একটি গভীর ক্ষতি নিয়ে এসেছে। এই সংঘর্ষটি হলো উদাহরণ যে কিভাবে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক স্বার্থগুলি ধ্বংসাত্মক পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারে। প্যারাগুয়ে, যা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় মানবিক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে, এখনও যুদ্ধের পরিণতি ভোগ করছে, যখন অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলি এই দুঃখজনক অভিজ্ঞতা থেকে পাঠ শিখছে।