পোল্যান্ডের ইতিহাস শুরু হয় মানবদেহের দ্বারা এর অঞ্চলে বসবাসের সময় পалеোলিথিক যুগে। নৃবিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন যে আধুনিক পোল্যান্ডের অঞ্চলে ১০০,০০০ বছরেরও বেশি আগে মানুষ বসবাস করত। খ্রীষ্টাব্দ চতুর্থ থেকে পঞ্চম শতকে, এসব ভূখণ্ডে উপজাতীয় জোটগুলি গঠন হতে শুরু করে, যার মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত হচ্ছে পোলিয়ান উপজাতি, যা ভবিষ্যৎ পোলিশ রাষ্ট্রের ভিত্তি হয়ে ওঠে।
৯৬৬ সালে প্রিন্স মেশকো I খ্রীষ্টধর্ম গ্রহণ করেন, যা পোলিশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল। এই ঘটনাটি পিয়াস্ট রাজবংশের সূচনা চিহ্নিত করে। ১০২৫ সালে পোল্যান্ড রাজ্য হয়, এবং প্রথম রাজা হয়ে ওঠেন বোলেস্লাভ I সাহসী। পরবর্তী শতাব্দীগুলিতে পোল্যান্ড তার সীমানা প্রসারিত করতে থাকে, এবং দ্বাদশ শতকে রাজ্যটির প্রথম বিভাজন ঘটে রাজতন্ত্রে।
চৌদশ থেকে ষোলশতক পর্যন্ত পোল্যান্ড একটি "সোনালী যুগ" অতিক্রম করেছিল। ১৫৬৯ সালে লিথুয়ানিয়ার সাথে একত্রিত হয়ে রিপাব্লিক অফ পল্যান্ড প্রতিষ্ঠা একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, যেহেতু এটি ইউরোপের অন্যতম বৃহত্তম রাষ্ট্র গঠনের সুযোগ করে দেয়। তবে আঠারো শতকের শেষের দিকে পোল্যান্ড প্রতিবেশী শক্তির দ্বারা হুমকির সম্মুখীন হয় — রাশিয়া, প্রুশিয়া এবং অস্ট্রিয়া। ১৭৭২, ১৭৯৩ এবং ১৭৯৫ সালে পোল্যান্ড div গঠিত হয় এবং এর স্বাধীনতা হারিয়ে যায়।
নিভৃত কালে পোলিশ জনগণ একাধিকবার দখলদারদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে, যার মধ্যে সবচেয়ে সুপরিচিত হচ্ছে ১৮৩০ সালের নভেম্বরের বিদ্রোহ এবং ১৮৬৩ সালের জানুয়ারির বিদ্রোহ। ব্যর্থতার পরেও, এই আন্দোলনগুলো জাতীয় সচেতনতা এবং স্বাধীনতার স্পৃহা বাড়িয়ে দেয়।
১৯১৮ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর, পোল্যান্ড তার স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করে। দেশের ইতিহাসে নতুন একটি অধ্যায় রাজনীতির অস্থিরতা এবং অর্থনৈতিক সমস্যাগুলির মধ্য দিয়ে চিহ্নিত হয়। ১৯২৬ সালে মার্শাল জোশেফ পিলসুদস্কি শাসনে আসেন, যিনি রাষ্ট্রকে শক্তিশালী করার জন্য একাধিক সংস্কার পরিচালনা করেন।
১৯৩৯ সালে পোল্যান্ড আবার বিশ্ব ঘটনাবলীর কেন্দ্রে চলে আসে। ১ সেপ্টেম্বর জার্মানির আক্রমণ এবং ১৭ সেপ্টেম্বর সোভিয়েত ইউনিয়নের আক্রমণ পোলিশ রাষ্ট্রকে ধ্বংস করে দেয়। যুদ্ধের সময় দেশে বিশাল ক্ষতি হয়: প্রায় ৬ মিলিয়ন নাগরিক, এর মধ্যে ৩ মিলিয়ন ইহুদি হত্যা হয়। পোলিশরা দখলদারদের বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল, গোপন সংগঠন তৈরি এবং বিদ্রোহে অংশগ্রহণের মাধ্যমে।
যুদ্ধের পর পোল্যান্ড পুনর্গঠিত হয়, তবে এটি সোভিয়েত ইউনিয়নের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। কমিউনিস্ট শাসনের প্রতিষ্ঠা দমন এবং স্বাধীনতার সীমাবদ্ধতার সাথে নিত্যদিন ছিল। তবে ১৯৮০ সালে অর্থনৈতিক সমস্যার এবং জনগণের অসন্তোষের মধ্য দিয়ে "সলিডারিটি" আন্দোলন জন্ম নেয়, যা লেহ ওয়аленসা নেতৃত্বে ছিল। এটি দেশে কমিউনিস্ট শাসনের শেষের সূচনা করে।
১৯৮৯ সালে পোল্যান্ড মুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে, যা গণতন্ত্রের দিকে অগ্রসর হওয়ার চিহ্ন ছিল। দেশটি ১৯৯৯ সালে ন্যাটোতে এবং ২০০৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশ করে। তখন থেকে, পোল্যান্ড স্থিতিশীল অর্থনৈতিক বৃদ্ধির প্রদর্শন করছে এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছে।
পোল্যান্ডের ইতিহাস হল স্বাধীনতা এবং আত্মসংবিধানের জন্য সংগ্রামের ইতিহাস। প্রাচীন যুগ থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত, পোলিশ জনগণ তাদের সংস্কৃতি এবং পরিচয়কে রক্ষা করতে থাকে, বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়ে। প্রতি নতুন প্রজন্মের সাথে তারা তাদের ঐতিহ্যকে আরও শক্তিশালী করে এবং একটি প্রত্যাশা এবং সম্ভাবনার পূর্ণ ভবিষ্যতের দিকে আগ্রসর হয়।