আর্মেনিয়ার ইতিহাসে সোভিয়েত সময়কাল 1917 সালে অক্টোবর বিপ্লবের পর শুরু হয় এবং 1991 সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের সাথে শেষ হয়। এই পর্বটি ঘটনাবহুল ছিল, যা দেশের অর্থনীতির, রাজনীতির এবং সাংস্কৃতিক উন্নয়নের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছিল। এই সময়ের মূল পয়েন্টগুলি, এর অর্জন এবং সমস্যাগুলি দেখা যাক।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষ এবং ওসমান সাম্রাজ্যের পতনের পর, আর্মেনিয়া 1920 সালে তার স্বাধীনতা ঘোষণা করে। তবে তাড়াতাড়ি এটি সোভিয়েত বাহিনীর অধীনে দখল হয়, এবং 29 নভেম্বর 1920 সালে আর্মেনিয়ান সোশ্যালিস্ট সোভিয়েত রিপাবলিক (এআরএসএসআর) প্রতিষ্ঠিত হয়। এই ঘটনাটি আর্মেনীয় জাতির ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল।
এআরএসএসআর কোর্কাসিয়ান সোশ্যালিস্ট ফেডারেটিভ রিপাবলিকের অংশ ছিল, এবং 1936 সালে এটি একটি হত্যা-ঐক্য রূপান্তরিত হয়। এই সময়ে কৃষি সংস্কার এবং সমবায়ীকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়, যা কৃষির কাঠামোতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনে। কৃষকবাড়ি প্রতিষ্ঠিত হয়, যা ঐতিহ্যগত কৃষির পদ্ধতিগুলিতে পরিবর্তন নিয়ে আসে।
1930 এর দশকে আর্মেনিয়ায় সক্রিয় শিল্পায়ন শুরু হয়। নতুন কারখানা এবং কল-কারখানা তৈরি হয়, এবং শক্তি অবকাঠামোও উন্নত হয়। মূল শিল্পগুলি হলো:
আর্মেনিয়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় অস্ত্র এবং গোলাবারুদ উৎপাদনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রও হয়ে ওঠে। দেশে সক্রিয়ভাবে বৈজ্ঞানিক গবেষণা পরিচালিত হয়, যা জনগণের শিক্ষার মান এবং পেশাদার প্রশিক্ষণ বাড়ানোর মধ্যে সহায়ক হয়।
সোভিয়েত সময়ে আর্মেনিয়াতে শিক্ষা এবং সংস্কৃতি উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন লাভ করে। এই সময়ে নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উদ্ভব হয়, প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট ও বিশ্ববিদ্যালয় সহ। মূল মনোযোগ দেওয়া হয়:
আর্মেনীয় সাহিত্য এবং শিল্পও বিকশিত হয়, এবং অনেক লেখক, কবি এবং শিল্পী উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জন করেন। অবেতিক ইসায়াকিয়ান এবং সার্গে পারাজানভের মতো বিখ্যাত ব্যক্তিত্বরা আর্মেনীয় সংস্কৃতি এবং জাতীয় আত্মসচেতনার प्रतीক হয়ে ওঠেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আর্মেনীয়রা সক্রিয়ভাবে যুদ্ধের কার্যক্রমে অংশ নেন। হাজার হাজার সেনা সম্মুখভাগে পাঠানো হয়, এবং তাদের মধ্যে অনেকেই সোভিয়েত ইউনিয়নের নায়ক হয়ে ওঠেন। আর্মেনীয়রা তৈরি করে গুরুত্বপুর্ণ যুদ্ধগুলো, যেমন স্তলিনগ্রাদ যুদ্ধ এবং ককেশাসের জন্য যুদ্ধ। মহিলাও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন, কারখানায় এবং কৃষির ক্ষেত্রে কাজ করে।
যুদ্ধ-পরবর্তী সময়টি পুনঃস্থাপন এবং উন্নয়নের সময় হয়ে ওঠে। আর্মেনিয়া তার অর্থনীতিকে পুনর্গঠন করে, যা যুদ্ধকালীন সময়ে গ্রহণযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, এবং শিল্প, কৃষি এবং অবকাঠামোতে সক্রিয় উন্নয়ন শুরু করে।
অর্জনের পরেও, আর্মেনিয়ায় সোভিয়েত সময়কাল গুরুতর চ্যালেঞ্জ এবং সমস্যার সাথেও যুক্ত ছিল। রাজনৈতিক নির্যাতন, বিশেষ করে স্তালিন যুগে, অনেক মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি করে। বুদ্ধিজীবী, বিজ্ঞানী এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের নিগৃহীত করা হয়েছিল, যা দেশের সাংস্কৃতিক জীবনের কষ্টকর প্রভাব ফেলে।
1960-70 এর দশকে আর্মেনিয়ায় ডেস্তালিনাইজেশনের সাথে সম্পর্কিত পরিবর্তন ঘটে। রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণে কিছু শিথিলতা শুরু হয়, যা অনেক সংখ্যক আর্মেনীয় শিল্পী এবং বিজ্ঞানীদের তাদের কার্যক্রমে ফিরে আসার সুযোগ দেয়। তবে, সেন্সরশিপ অব্যাহত ছিল, এবং মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে রয়ে যায়।
1980 এর দশকের শেষ থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নে গ্লাসনস্ত এবং গর্ভস্তার প্রক্রিয়া শুরু হয়, যা আর্মেনিয়ার পরিস্থিতিতে প্রভাব ফেলতে শুরু করে। জাতীয় আত্মসচেতনতা বাড়ানো হয়, এবং আর্মেনীয় নাগরিকের জন্য, বিশেষ করে নাগর্নো-কারাবাখের আর্মেনীয় জনগণের জন্য, অধিকারের পক্ষে ব্যাপক প্রতিবাদ শুরু হয়। 1988 সালে নাগর্নো-কারাবাখ স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল এর আর্মেনিয়ায় যোগদানের আগ্রহ প্রকাশ করে, যা আজারবাইজানের সাথে জাতিগত সংঘাত সৃষ্টি করে।
1990 সালে আর্মেনিয়া তার স্বাধীনতা ঘোষণা করে, এবং 1991 সালে, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর, এটি একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হয়ে ওঠে। এই প্রক্রিয়া কঠিন সামাজিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থার এবং সংঘাতের সাথে যুক্ত ছিল, তবে স্বাধীনতার ইচ্ছা আর্মেনীয় জনগণের জন্য একটি প্রধান চালক হয়ে ওঠে।
আর্মেনিয়ার ইতিহাসে সোভিয়েত সময়কাল উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সময় ছিল, ইতিবাচক এবং নেতিবাচক উভয় পদক্ষেপে। এটি আর্মেনীয় জনগণের জীবনে গভীর একটি ছাপ ফেলেছে এবং আধুনিক আর্মেনিয়ান রাষ্ট্রের গঠনে একটি মূল ভূমিকা পালন করেছে। 1991 সালে অর্জিত স্বাধীনতা মুক্তি এবং আর্মেনীয় জনগণের অধিকারের জন্য বহু বছরের সংগ্রামের ফলস্বরূপ হয়ে ওঠে।