রাশিয়ার ইতিহাস শুরু হয় ৯ম শতকে প্রাচীন রুশ রাষ্ট্র গঠনের সাথে। এই সময়ে শ্রমজীবী গোষ্ঠীগুলি একত্রিত হচ্ছিল, এবং ৮৬২ সালে নায়ক রিউরিক রিউরিকোভিচদের রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা হয়ে ওঠেন, যারা রুশে ৭০০ বছরেরও বেশি সময় শাসন করেন।
কিয়েভের রুশ, যা রিউরিক দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, ১০-১১ শতকে তার সতির্ক সময়ে পৌঁছেছিল। এই সময়ে রুশের খ্রিষ্টীয়করণ ঘটে, যা ৯৮৮ সালে নায়ক ভ্লাদিমির দ্বারা শুরু হয়, যা বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের সাথে সম্পর্ককে দৃঢ়তর করে।
১৩শ শতকের শুরুতে রুশ মঙ্গোলদের দ্বারা হুমকির সম্মুখীন হয়। ১২৪০ সালে কিয়েভ দখল করা হয়, এবং রুশের জমিগুলি সোনালী অর্ডারের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। এই সময়টি রাজনৈতিক বিভাজন এবং অবনতির দ্বারা চিহ্নিত হয়, তবে উত্তর এবং পূর্বে নতুন রাজ্যগুলির গঠনের সূচনা হয়।
১৪-১৫ শতকে রুশ জমিগুলি মস্কোর রাজ্য অধীনে একত্রিত হতে শুরু করে। নায়ক ইভান III (ইভান দ্য গ্রেট) ১৪৮০ সালে তাতার দাসত্বের অবসান ঘটান, নতুন শক্তিশালী রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা হয়ে ওঠেন। এই সময় কেন্দ্রীয় কর্তৃত্বের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং মস্কো রুশের প্রধান রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হয়ে ওঠে।
১৭-১৮ শতক পিটার I-এর সংস্কারের সাথে চিহ্নিত হয়, যিনি রাশিয়ার প্রথম সম্রাট হয়ে ওঠেন। তিনি সেনাবাহিনী, রাষ্ট্র পরিচালনা এবং সংস্কৃতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনেন। পিটার সেন্ট পিটার্সবার্গ প্রতিষ্ঠা করেন, যা নতুন রাজধানী এবং রাশিয়ার ইউরোপীয় অভিমুখের প্রতীক হয়ে ওঠে।
১৮ শতক থেকে ২০ শতকের শুরু পর্যন্ত রাশিয়া বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম সাম্রাজ্যে পরিণত হয়। ক্যাথেরিন II (ক্যাথেরিন দ্য গ্রেট) এর শাসনে দেশটি নতুন অঞ্চল অধিগ্রহণ করে এবং ইউরোপে তার প্রভাব বাড়িয়ে তোলে।
তবে ১৯ শতকে রাশিয়া অভ্যন্তরীণ বিরোধের সম্মুখীন হয়। ১৮৬১ সালের সংস্কার কৃষকদের মুক্তি দেয়, কিন্তু সামাজিক সমস্যাগুলি সমাধান করে না। অসন্তোষ বাড়িয়ে তোলে বিপ্লবী মনোভাব।
১৯১৭ সালের ফেব্রুয়ারি এবং অক্টোবর বিপ্লবগুলি রাজতন্ত্রের অবসান ঘটায় এবং ভ্লাদিমির লেনিনের নেতৃত্বে বোলশেভিকদের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করে। এটি নতুন একটি যুগের সূচনা করে - সোভিয়েত ইউনিয়নের যুগ। গৃহযুদ্ধ (১৯১৭-১৯২২) সমাজ এবং অর্থনীতিতে গভীর ক্ষত রেখেছিল।
১৯২২ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠিত হয়, যা দ্রুত বিশ্বের শীর্ষ দশটি দেশের মধ্যে একটি হয়ে ওঠে। স্তালিনের নিপীড়ন এবং ১৯৩০-এর দশকের সমবায়করণ উল্লেখযোগ্য ক্ষতির কারণ হয়, তবে দেশের শিল্পায়নের দিকে নিয়ে যায়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ (১৯৪১-১৯৪৫) রাশিয়ার জন্য একটি পরীক্ষায় পরিণত হয়। বিজয়ের পরে, সোভিয়েত ইউনিয়ন দুইটি সুপারপাওয়ারের একটি হয়ে উঠেছে এবং ঠান্ডা যুদ্ধের যুগ শুরু হয়।
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়ে, এবং রাশিয়া একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হয়ে ওঠে। এই সময়টিতে অর্থনৈতিক সমস্যাগুলি এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার চিহ্নিত করা হয়েছে। ২০০০-এর দশকের শুরুতে ভ্লাদিমির পুতিনের নেতৃত্বে অর্থনীতির পুনরুদ্ধার এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে রাশিয়ার অবস্থান শক্তিশালী হয়।
আজ রাশিয়া নতুন চ্যালেঞ্জ এবং হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। পশ্চিম বিশ্বের সাথে সংঘাত, অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এবং সামাজিক উন্নয়নের প্রশ্নগুলি актуаль। তবে রাশিয়া বিশ্ব মঞ্চে একটি গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে তার স্থান বজায় রাখতে থাকে।
রাশিয়ার ইতিহাস হল সংগ্রামের, পরিবর্তনের এবং অর্জনের ইতিহাস। এটি ঘটনাবহুল, যা শুধু রাশিয়ান পরিচয়কেই নয়, বরং দেশের বৈশ্বিক স্তরে প্রভাবকেও গঠন করে।