ঐতিহাসিক এনসাইক্লোপিডিয়া

প্যাট্রিয়নে আমাদের সমর্থন করুন

শ্রীলঙ্কার ইতিহাস

শ্রীলঙ্কা, যা সিলন হিসেবেও পরিচিত, ২৫০০ বছরেরও বেশি সময়ের একটি সমৃদ্ধ এবং বহুমুখী ইতিহাস রয়েছে। এই দেশটি ভারতীয় উপমহাদেশের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত এবং এখানে বহু সংস্কৃতি, ধর্ম ও ভাষার আবাস।

প্রাচীন সভ্যতা

শ্রীলঙ্কার প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ভারতীয় গ্রন্থগুলিতে, যেমন "রামায়ণ", যেখানে লঙ্কা মিথ্যা রাজ্যের সাথে সম্পর্কিত ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিক খননগুলি নির্দেশ করে যে প্রথম বসতি স্থপনের জন্য প্রায় ৩০,০০০ বছর আগে দ্বীপে এসেছিল। প্রধান প্রাচীন বসতিগুলি ছিল আনুরাধাপুরা এবং পলন্‌নরুয়াতে।

বৌদ্ধ ধর্ম এবং এর প্রভাব

খ্রিস্ট পূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে শ্রীলঙ্কায় সম্রাট আশোকা দ্বারা প্রেরিত ধর্মপ্রচারকদের মাধ্যমে বৌদ্ধ ধর্মের বিস্তারের প্রক্রিয়া শুরু হয়। বৌদ্ধ ধর্ম প্রধান ধর্ম হয়ে ওঠে এবং আনুরাধাপুরা বৌদ্ধ সংস্কৃতি ও শিক্ষার কেন্দ্র হিসাবে পরিণত হয়।

মধ্যযুগ

সাত শতকের শুরুতে শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিক ভঙ্গুরতার যুগ শুরু হয়, যখন বিভিন্ন রাজবংশ ক্ষমতার জন্য লড়াই করে। এই সময়ে ভারত এবং মধ্য প্রাচ্যের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে উঠে।

সিগিরিয়া রাজবংশ

পঞ্চম শতকের শেষে সিগিরিয়া রাজবংশ প্রতিষ্ঠিত হয়, যারা সিগিরিয়া পাহাড়ে বিখ্যাত দুর্গ নির্মাণ করে। এই ভিত্তিটি সেই সময়ের স্থাপত্য প্রতিভা এবং সংস্কৃতির প্রতীক হয়ে ওঠে।

উColonization যুগ

ষোড়শ শতাব্দীতে ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক শক্তিগুলি শ্রীলঙ্কা দখল করা শুরু করে। পর্তুগিজেরা প্রথম দ্বীপের একটি অংশ দখল করে, পরে ডাচেরা এবং তার পর ব্রিটিশরা আসে। ১৮১৫ সালে দ্বীপটি ব্রিটিশ সস্তা এবং সিলন নামে পরিচিত হয়।

স্বাধীনতার জন্য লড়াই

২০ শতকের শুরুতে শ্রীলঙ্কায় স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন শুরু হয়, যা বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন দ্বারা পরিচালিত হয়। ১৯৪৮ সালে শ্রীলঙ্কা ব্রিটেনের থেকে স্বাধীনতা লাভ করে এবং একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে পরিণত হয়।

আধুনিক ইতিহাস

স্বাধীনতা নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে, যার মধ্যে অভ্যন্তরীণ সংঘাত রয়েছে। ১৯৮৩ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ২৬ বছর ধরে দেশটি সরকারের বাহিনী এবং তামিল টাইগারদের মধ্যে গৃহযুদ্ধের শিকার হয়, যারা তামিল জনগণের জন্য স্বায়ত্তশাসনের জন্য লড়াই করেছিল।

যুদ্ধোত্তর পুনর্গঠন

২০০৯ সালে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরে শ্রীলঙ্কা পুনর্গঠন এবং জাতীয় পুনর্মিলনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। দেশের অর্থনীতি বাড়তে শুরু করে এবং এটি একটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য হয়ে ওঠে।

সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য

শ্রীলঙ্কার একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে, যা বৌদ্ধ মন্দির, ঔপনিবেশিক স্থাপত্য এবং বিভিন্ন ঐতিহ্য অন্তর্ভুক্ত করে। সিংহলী এবং তামিল ভাষা দেশের প্রধান ভাষা এবং বৌদ্ধ ধর্ম, হিন্দু ধর্ম, ইসলাম এবং খ্রিস্টান ধর্ম প্রধান ধর্ম।

আধুনিক চ্যালেঞ্জ

অর্জনের মধ্যেও, শ্রীলঙ্কা এখনও অর্থনৈতিক সমস্যার, জলবায়ু পরিবর্তন এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সাথে মোকাবিলা করছে। তবে দেশের জনগণ তাদের ভবিষ্যতের ব্যাপারে আশা ধরে রেখেছে।

উপসংহার

শ্রীলঙ্কার ইতিহাস হলো প্রতিরোধ, বৈচিত্র্য এবং সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ইতিহাস। এর ইতিহাস বুঝতে পারা দেশের আধুনিক পরিস্থিতি এবং এর ভবিষ্যতের সম্ভাবনা বুঝতে সাহায্য করে।

শেয়ার করতে:

Facebook Twitter LinkedIn WhatsApp Telegram Reddit Viber email

বিস্তারিত:

প্যাট্রিয়নে আমাদের সমর্থন করুন