এস্টোনিয়ার ইতিহাস কয়েক হাজার বছরের। দেশের ভূখণ্ডে মানুষের কর্মকাণ্ডের প্রথম চিহ্নগুলি পাথরের যুগের শেষে, প্রায় ৮৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে। এরা ছিল শিকারী ও সংগ্রাহক, যারা তাদের পিছনে অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার রেখে গেছে।
পরবর্তী কয়েক হাজার বছরে এসটোণিয়ায় বিভিন্ন সংস্কৃতি বিকশিত হয়েছিল, যেমন মেসোলিটিক, নিওলিটিক এবং ব্রোঞ্জের সংস্কৃতি। খ্রিস্টাব্দের শুরুতে, দেশটির ভূখণ্ডে বিভিন্ন ফিনো-উগুর জাতিগোষ্ঠীর বসবাস ছিল।
১৩ শতকের শুরুতে, এস্তোনিয়া পার্শ্ববর্তী শক্তিগুলোর আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। ১২০৮ সালে প্রথম উগ্রপন্থী অভিযান শুরু হয়, যার ফলস্বরূপ তাল্লিনের একটি গির্জা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এই অঞ্চলের খ্রীষ্টীয়রণ শুরু হয়।
১৩ শ থেকে ১৩ শতকের মধ্যভাগে এস্তোনিয়া লাইভোনিয়ান অর্ডার এবং ডেনমার্কের মধ্যে বিভক্ত হয়ে যায়। এই সময় দুর্গ এবং দুর্গের নির্মাণ শুরু হয়, যেমন তুরায়দা দুর্গ এবং তাল্লিনের পৌরসভা।
১৬ শতকে, এস্তোনিয়া সুইডেন এবং পোল্যান্ডসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে সংগ্রামের ক্ষেত্র হয়ে ওঠে। ১৫৬১ সালে ইতিমধ্যে বেশিরভাগ এলাকা সুইডিশ শাসনে চলে যায়। এই সময় সংস্কৃতি এবং শিক্ষায় ব্যাপক উন্নয়নের বিশিষ্ট সংস্কারগুলি পরিলক্ষিত হয়।
১৭ শতকে, এস্তোনিয়া বাল্টিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এবং সংস্কৃতিক কেন্দ্র হয়ে ওঠে, যা তার অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করে।
১৭১০ সালে, উত্তর যুদ্ধের পর, এস্তোনিয়া রাশিয়ার অধীনে চলে যায়। এই সময় সামাজিক ও রাজনৈতিক কাঠামোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটে। ক্ষমতা জমিদারদের হাতে চলে যায় এবং কৃষকরা তাদের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।
তবে, ১৯ শতকের শেষে জাতীয় জাগরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এস্তোনিয়ানরা তাদের পরিচয় সম্পর্কে সচেতন হতে শুরু করে এবং সাংস্কৃতিক স্বায়ত্তশাসনের জন্য সংগ্রাম করে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে, এস্তোনিয়া ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৯১৮ তারিখে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। এটি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য জাতীয় আন্দোলনের প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ।
তবে স্বাধীনতা অস্থায়ী ছিল। ১৯৪০ সালে এস্তোনিয়া সোভিয়েত ইউনিয়নের দ্বারা অধিগ্রহণ করা হয়, এবং ১৯৪১ সালে নাৎসী জার্মানি দ্বারা দখল করা হয়। ১৯৪৪ সালে, এস্তোনিয়া আবার সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ হয়ে যায়।
১৯৯১ সালে, সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙ্গনের পর, এস্তোনিয়া আবার স্বাধীনতা পায়। এই সময়কালে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক সংস্কার ঘটেছিল।
এস্তোনিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটোর সদস্য হয়ে যায়, যা তার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে মিশ্রণে সহায়তা করে।
আজকাল, এস্তোনিয়া ডিজিটাল প্রযুক্তিতে এক অন্যতম অগ্রণী দেশ হিসাবে পরিচিত, উন্নত অর্থনীতি এবং উচ্চ জীবনের মান রয়েছে।