ভারত একটি সমৃদ্ধ এবং বহু-মাত্রিক ইতিহাসযুক্ত দেশ, যার হাজার হাজার বছরের ইতিহাস রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে, ভারতের অনেক মহান ব্যক্তিত্বের উত্থান ঘটেছে, যারা বিভিন্ন জীবনের ক্ষেত্রে: রাজনীতি, বিজ্ঞান, শিল্প, দর্শন এবং ধর্মে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। এই নিবন্ধটি ভারতের পরিচিত ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বদের সম্পর্কে, whose ধারণা এবং কর্মে ইতিহাসের গতিপথ এবং দেশের উন্নয়নের উপর প্রভাব ফেলেছে।
মহাত্মা গান্ধী, বা মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধী, ভারতীয় এবং বিশ্ব ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তিনি ২ অক্টোবর ১৮৬৯ সালে গুজরাটের পোরবন্দরে জন্মগ্রহণ করেন। গান্ধী ভারতকে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্ত করার জন্য আন্দোলনের নেতা হয়েছিলেন, অহিংস প্রতিরোধ এবং নাগরিক অগ্রহণযোগ্যতা প্রচার করে।
তার অহিংসার দর্শন, যা "আহিংসা" নামে পরিচিত, এবং প্রতিবাদের পদ্ধতি, যেমন ১৯৩০ সালের "নুনের মিছিল", স্বাধীনতার জন্য সংগ্রামের মূল সরঞ্জাম হয়ে ওঠে। গান্ধী জাতিগত সংখ্যালঘুদের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্যও কাজ করেছিলেন এবং অনস্পর্শিতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। তিনি ৩০ জানুয়ারী ১৯৪৮ সালে নিহত হন, কিন্তু তাঁর শান্তি এবং ন্যায়ের ধারণা আজও বিশ্বজুড়ে মানুষকে অনুপ্রাণিত করছে।
জওহরলাল নেহরু, ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা ছিলেন। তিনি ১৪ নভেম্বর ১৮৮৯ সালে আল্লাহাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। নেহরু গান্ধীর একজন শিষ্য ছিলেন এবং ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি নতুন স্বাধীন ভারতের গঠন, তার সংবিধানের উন্নয়ন, এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের কার্যক্রম প্রবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। নেহরু ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্র এবং সামাজিক ন্যায়ের সমর্থক ছিলেন। শিক্ষা এবং বিজ্ঞানে তাঁর কাজ আধুনিক ভারতীয় রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন করেছে।
সুভাস চন্দ্র বস — একজন বিশিষ্ট ভারতীয় জাতীয়তাবাদী এবং সামরিক নেতা, যিনি ভারতকে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি ২৩ জানুয়ারী ১৮৯৭ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। বস গান্ধীর চেয়ে স্বাধীনতার জন্য সংগ্রামের অধিক উগ্র পন্থার সমর্থক ছিলেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ভারতীয় বাহিনীকে জাপানের সামরিক সহায়তার সাথে একত্রিত করার চেষ্টা করেছিলেন।
তিনি ভারতীয় জাতীয় সেনার (INA) নেতা হয়েছিলেন এবং নির্বাসনে একটি স্বাধীন সরকারের প্রতিষ্ঠার জন্য সক্রিয় কাজ করেছিলেন। তার প্রচেষ্টার পরেও, বস ১৯৪৫ সালে রহস্যজনক পরিস্থিতিতে নিহত হন এবং তার উত্তরাধিকার ভারত ও তার বাইরের পৃথিবীতেও আলোচনা করা হয়।
শ্রীনিভাস রামানুজন — ভারতের সবচেয়ে মহান গাণিতিক, ২২ ডিসেম্বর ১৮৮৭ সালে তামিলনাড়ুর এরোদেতে জন্মগ্রহণ করেন। সংখ্যা তত্ত্ব, গাণিতিক বিশ্লেষণ এবং অসীম ধারার ক্ষেত্রে তার অসামান্য অর্জন তাকে গাণিতিক সমাজে বিখ্যাত করেছে।
ফরমাল গাণিতিক শিক্ষা না থাকার পরেও, রামানুজন অনেক মৌলিক তত্ত্ব এবং ধারণা প্রস্তুত করেছিলেন, যেগুলির অনেকগুলি পরে অন্যান্য গাণিতিক দ্বারা নিশ্চিত করা হয়। সংখ্যা বিক্ষেপণ এবং মডুলার ফর্মের উপর তার কাজ আধুনিক গাণিতিকে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে। রামানুজন ২৬ এপ্রিল ১৯২০ সালে মারা যান, কিন্তু তাঁর বৈজ্ঞানিক আবদানের স্মৃতি অমলিন।
অ্যুরোবিন্দো ঘোষ — ভারতীয় দার্শনিক, কবি এবং জাতীয়তাবাদী, ১৫ আগস্ট ১৮৭২ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ একটি ভুমিকা পালন করেন এবং ভারতের আধ্যাত্মিক এবং সাংস্কৃতিক পরিচয়ের ধারণা প্রস্তাব করেন। ঘোষ "দেবী" ধারণার বিকাশ করেন, যা আধ্যাত্মিক জাগরণের এবং ভারতীয়দের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রামে একত্রিত করার ব্যাপারে নির্দেশ করে।
১৯০৭ সালের পর, অ্যুরোবিন্দো দর্শন এবং আধ্যাত্মিক অনুশীলনের উপর মনোনিবেশ করতে শুরু করেন, যা পন্ডিচেরিতে একটি আশ্রম প্রতিষ্ঠায় নিয়ে যায়। তার অন্তর্ভুক্ত দার্শনিকতা, যা আত্মা এবং বস্তুর সমন্বয়ে ভিত্তি করে, আজও অধ্যয়ন এবং আলোচনা করা হয়।
লাল-বাহাদুর শাস্ত্রী, ভারতের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী, ২ অক্টোবর ১৯০৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নেহরুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন এবং দেশের স্বাধীনতা অর্জনের পরে তারকে আরও শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। শাস্ত্রী সাধারণ মানুষের অধিকার সংগ্রামে একটি প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন এবং ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় "জয় হিন্দ" হাত উঁচিয়ে কথা বলেছিলেন।
তার খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো এবং "আমাকে স্বাধীনতা দিন যাতে আমি কাজ করতে পারি" স্লোগান অর্থনীতিকে শক্তিশালী করেছে এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। শাস্ত্রী ১১ জানুয়ারী ১৯৬৬ সালে মারা যান, তার উত্তরাধিকার ভবিষ্যত প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে যাবে।
ভারতের ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব যেমন গান্ধী, নেহরু এবং রামানুজন, দেশের সংস্কৃতি এবং ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য চিহ্ন ফেলেছেন। তাদের দর্শন, ধারণা এবং কর্ম আজও ভারতীয় সমাজে প্রভাব বিস্তার করে। এই ব্যক্তিত্বগুলি কেবল ভারতের নয়, বিশ্বের সমগ্র জনগণের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে রয়েছে, যা আত্মার শক্তি, স্বাধীনতার জন্য প্রবৃত্তি এবং জ্ঞান的重要তা প্রদর্শন করে।