ঐতিহাসিক এনসাইক্লোপিডিয়া

ভারতের ইতিহাস

ভারত — বিশ্বের প্রাচীনতম সভ্যতাগুলির মধ্যে একটি, এর ইতিহাস পাঁচ হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে বিস্তৃত। এই জমি তার সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য, দার্শনিক শিক্ষাগুলি এবং ঐতিহাসিক ঘটনাগুলির জন্য পরিচিত, যা আধুনিক সমাজকে গঠন করেছে।

প্রাচীন সভ্যতা

ভারতের ইতিহাস শুরু হয় সিন্ধু সভ্যতা দিয়ে, যা প্রায় ২৫০০ খ্রিস্টপূর্বে সৃষ্টি হয়েছিল। এই সভ্যতার প্রধান শহরগুলি, যেমন হড়াপ্পা এবং মোহেঞ্জো-দারো, উন্নত জল সরবরাহ ব্যবস্থা এবং পরিকল্পনার জন্য পরিচিত ছিল।

সিন্ধু সভ্যতা প্রায় ১৯০০ খ্রিস্টপূর্বে ভেঙে পড়ে, সম্ভবত জলবায়ু পরিবর্তন এবং উত্তরের উপজাতির আক্রমণের কারণে।

বেদের যুগ

সিন্ধু সভ্যতার পতনের পরে ভারতে বেদের যুগ শুরু হয় (প্রায় ১৫০০ খ্রিস্টপূর্ব)। এই সময়ে ভারতীয় উপমহাদেশে বেদীয় পাঠ্যগুলির বিকাশ ঘটতে শুরু করে, যা ভারতীয় দার্শনিকতা, ধর্ম এবং সংস্কৃতির ভিত্তি স্থাপন করে।

বেদীয় সংস্কৃতি কৃষি অর্থনীতি, যাযাবর উপজাতি এবং জাতিভেদ প্রথার জন্য চিহ্নিত, যা পরবর্তীতে ভারতীয় সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সম্রাজ্য এবং রাজ্য

পরবর্তী এক হাজার বছরের মধ্যে ভারতে বিভিন্ন সম্রাজ্য এবং রাজ্য গঠিত হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত ছিল মৌর্য সম্রাজ্য, যা চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের দ্বারা চতুর্থ শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। অশোকের শাসনের অধীনে, চন্দ্রগুপ্তের নাতি, সম্রাজ্যটি তার শিখর প্রাপ্ত করে এবং বৌদ্ধ ধর্মের প্রসার ও সহনশীলতার জন্য পরিচিত হয়।

পরবর্তীকালে, খ্রিস্টাব্দের প্রথম শতাব্দীতে গуп্ত সাম্রাজ্যের উদ্ভব ঘটে, যা ভারতীয় সংস্কৃতি, বিজ্ঞান এবং শিল্পের স্বর্ণযুগ হিসেবে বিবেচিত।

মধ্যযুগ এবং মুসলিম বিজয়

৮ম শতাব্দী থেকে ভারতে মুসলিম বিজয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়, যা ১৩শ শতাব্দীতে দিল্লি সুলতানাতের প্রতিষ্ঠায় পৌঁছায়। এই সময় সংস্কৃতি ও ধর্মের মিশ্রণ এবং চমৎকার স্থাপত্য স্মৃতির নির্মাণ দ্বারা চিহ্নিত হয়।

“ভারত সেই ভূমি, যেখানে ঐতিহ্য এবং উদ্ভাবনা সহাবস্থান করে।”

মহান মুঘল সাম্রাজ্য

১৬শ শতাব্দীতে মহান মুঘল সাম্রাজ্যের আবির্ভাব ঘটে, যা বাবরের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সাম্রাজ্য ভারতের শিল্প ও স্থাপত্যের উন্মেষ ঘটিয়ে, যেখানে তাজমহল-এর মতো মাস্টারপিসগুলি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। আকবরের শাসন সময়ে সাম্রাজ্যটি তার শক্তির শিখরে পৌঁছে এবং ধর্মীয় সহনশীলতা এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের জন্য পরিচিত হয়।

নবীন পদক্ষেপের সময়কাল

১৭শ শতাব্দীতে ইউরোপীয় শক্তিগুলি ভারতকে নবীনভাবে উপনিবেশিত করতে শুরু করে। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দেশটির একটি উল্লেখযোগ্য অংশের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে, যা অর্থনৈতিক এবং সামাজিক অধঃপতনের দিকে নিয়ে যায়।

১৮৫৭ সালে সিপাহিদের বিদ্রোহ ঘটে, যা ভারতীয়দের জন্য ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রথম মুক্তির চেষ্টা ছিল। এই বিদ্রোহ দমন করা হয়, কিন্তু এটি স্বাধীনতার জন্য সংগ্রামের প্রতীক হয়ে ওঠে।

স্বাধীনতার আন্দোলন

২০শ শতাব্দীর শুরুতে বৃহৎ স্বাধীনতার আন্দোলন শুরু হয়, যার নেতৃত্বে ছিলেন মহাত্মা গান্ধী এবং জওহরলাল নেহরু। গান্ধী অহিংস প্রতিরোধ এবং নাগরিক অসহযোগের ভাবনা প্রচার করেন।

দীর্ঘ সংগ্রাম এবং বিশ্বযুদ্ধের পরে ভারত অব finalmente ১৫ আগস্ট ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা অর্জন করে। তবে এই স্বাধীনতা ভারত এবং পাকিস্তানে বিভক্তির সাথে উপস্থিত হয়, যা ব্যাপক হিংসা এবং অভিবাসনে নিয়ে যায়।

আধুনিক ভারত

স্বাধীনতা লাভের পর ভারত ১৯৫০ সালে একটি সংবিধান গ্রহণ করে, একটি গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়। দেশটি শিল্পায়ন এবং আধুনিকীকরণের প্রক্রিয়া শুরু করে, বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম অর্থনৈতিক কেন্দ্র হয়ে ওঠে।

আধুনিক ভারত বিভিন্ন সংস্কৃতি, ভাষা এবং ধর্মের বৈচিত্র্য দ্বারা চিহ্নিত, পাশাপাশি একটি ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি যা সারা বিশ্ব থেকে বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে থাকে।

নিষ্কर्ष

ভারতের ইতিহাস একটি জটিল এবং বহুবিধ মোজাইক, যা বিভিন্ন সংস্কৃতি এবং সভ্যতার পারস্পরিক ক্রিয়া প্রতিফলিত করে। দেশটি উন্নতি করতে থাকে এবং বৈশ্বিক মঞ্চে একটি গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে রয়ে যায়, তার অনন্য সংস্কৃতি রক্ষা করতে।

শেয়ার করতে:

Facebook Twitter LinkedIn WhatsApp Telegram Reddit email

বিস্তারিত: