ইসরায়েলের ইতিহাস হাজার বছরেরও বেশি সময় জুড়ে, প্রাচীন সময় থেকে আধুনিক সময় পর্যন্ত। এটি একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের দেশ, যেখানে বিভিন্ন সভ্যতার পথগুলো মিলিত হয়েছে।
ইসরায়েলের ইতিহাস পবিত্র বাইবেলের সময়কাল থেকে শুরু হয়। বাইবেলের মতে, মোশীর নেতৃত্বে ইহুদিরা মিসর থেকে বেরিয়ে এসে প্রতিজ্ঞির দেশে পৌঁছায়। প্রায় ১৩শ শতাব্দী পূর্বাব্দে ইহুদিরা তাদের রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে, যা ইসরায়েল হিসাবে পরিচিত।
সন্ধ্যার সিংহাসনে ছিলেন সৌল, ডেভিড এবং শ্লোমো। শ্লোমোর সময়ে ইসরায়েল রাজ্য তার সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছায়, যিনি জেরুজালেমে প্রথম মন্দিরটি নির্মাণ করেন।
শ্লোমোর মৃত্যুর পর রাজ্যটি দুটি ভাগে বিভক্ত হয়: উত্তর রাজ্য ইসরায়েল এবং দক্ষিণ রাজ্য ইহুদিয়া। উত্তর রাজ্যটি ৭২২ পূর্বাব্দে অ্যাসিরিয়ানদের দ্বারা দখল করা হয়, এবং দক্ষিণ রাজ্যটি ৫৮৬ পূর্বাব্দে ব্যাবিলনীয়দের দ্বারা দখল করা হয়। এর ফলে ইহুদিরা বন্দী অবস্থায় চলে যায়, এবং প্রথম মন্দিরটি ধ্বংস হয়।
৬ষ্ঠ শতাব্দীতে, ব্যাবিলন দখলের পর পার্সিয়ানদের হাতে ইহুদিরা তাদের জন্মভূমিতে ফিরে আসার এবং মন্দির পুনর্নির্মাণের সুযোগ পায়। তবে, প্রথম শতাব্দীতে রোমানদের আগমন সহ ইহুদের স্বাধীনতা আবারও হারিয়ে যায়।
৭০ খ্রিষ্টাব্দে রোমানরা দ্বিতীয় মন্দিরটি ধ্বংস করে, এবং ইহুদিরা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
মধ্যযুগে, ইহুদিরা নিপীড়ন এবং বিরোধী-ইহুদি মনোভাবের সম্মুখীন হন। স্পেন এবং পূর্ব ইউরোপের মতো বিভিন্ন দেশে, ইহুদিরা দাঙ্গা এবং নির্বাসনের শিকার হন।
“প্রতিটি প্রজন্মের তার নিজস্ব নায়ক এবং শহীদ থাকে, এবং ইহুদি জাতি এর ব্যতিক্রম নয়।”
১৯শ শতাব্দীর শেষের দিকে জিওনিস্ট আন্দোলন শুরু হয়, যার লক্ষ্য ছিল প্যালেস্টাইনে একটি ইহুদি রাষ্ট্র গঠন করা। এই আন্দোলনের একজন প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন থিওডর হের্জল, যিনি ১৮৯৭ সালে প্রথম জিওনিস্ট কংগ্রেস আহ্বান করেন।
প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং হলোকাস্টের পরে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সমর্থন করে। ১৪ই মে, ১৯৪৮-এ ইসরায়েল রাষ্ট্র ঘোষণা করা হয়, এবং সাথে সাথে প্রথম আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু হয়।
ইসরায়েল তার স্বাধীনতা রক্ষা করতে সক্ষম হয় এবং তার অঞ্চল বৃদ্ধি পায়। যুদ্ধে মিলিয়ন মিলিয়ন ফিলিস্তিনি শরণার্থী হয়ে পড়ে।
তখন থেকে ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হয়ে উঠেছে। দেশটি ১৯৬৭ এবং ১৯৭৩ সালে সংঘাত এবং শান্তিচুক্তির মধ্য দিয়ে গিয়েছে, এছাড়াও মিশর এবং জর্ডানির সঙ্গে চুক্তি করেছে।
আজকের ইসরায়েল একটি উচ্চ উন্নত দেশ, যার শক্তিশালী অর্থনীতি এবং উচ্চ প্রযুক্তি রয়েছে। তবে, ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংঘাত এখনও চলছে, এবং এই অঞ্চলের পরিস্থিতি জটিল রয়েছে।
ইসরায়েলের ইতিহাস বাঁচা, স্বাধীনতা এবং আত্মনির্ধারণের জন্য সংগ্রামের ইতিহাস। এটি একটি অনন্য ঐতিহ্য এবং সমৃদ্ধ সংস্কৃতির দেশ, এবং এর ভবিষ্যৎ বিশ্ব ঘটনা কেন্দ্রে রয়েছে।