২১ শতক ইরাকের জন্য উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের যুগ হয়ে উঠেছে, যা অভ্যন্তরীণ এবং বহিরাগত উভয় কারণ দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। দেশটি ২০০৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণের ভারী পরিণতি সহ্য করেছে, ফলে সৃষ্ট সংঘর্ষ এবং পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা। এই সময়কালটি স্থিতিশীলতা, জাতীয় ঐক্য এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সংগ্রামের সাথে চিহ্নিত, যা আধুনিক ইরাকের রূপরেখা নির্ধারণ করে।
মার্চ ২০০৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের সহযোগীদের ইরাকে আক্রমণ শুরু হয়, যার লক্ষ্য ছিল সদ্দাম হোসেনের শাসন উচ্ছেদ করা, যার বিরুদ্ধে গণহত্যার অস্ত্র এবং সন্ত্রাসবাদে সমর্থনের অভিযোগ ছিল। আক্রমণটি অঞ্চলের রাজনৈতিক মানচিত্রে তীব্র পরিবর্তন ঘটিয়েছিল এবং ইরাকের জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিণতি বয়ে এনেছিল।
সদ্দাম হোসেন এপ্রিল ২০০৩ সালে ক্ষমতাচ্যুত হন, কিন্তু এটি ক্ষমতার শূন্যতা সৃষ্টি করে, যা ব্যাপক সহিংসতা, জাতিগত সংঘর্ষ এবং বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর উত্থানের দিকে নিয়ে যায়। বহু সংখ্যক গোষ্ঠী,Including Sunni, Shia, এবং Kurd এর মধ্যে অঞ্চল এবং সম্পদ নিয়ন্ত্রণের জন্য লড়াই শুরু হয়, যা দেশের অস্থিতিশীলতা বাড়িয়ে তোলে।
হোসেনের পতনের পর ইরাক কোয়ালিশন বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে আসে, যা দেশটির অধিকারকরণের দিকে নিয়ে যায়। এই সময় একটি অস্থায়ী প্রশাসনিক কাউন্সিল গঠন করা হয়, যা শৃংখলা পুনঃস্থাপন এবং নতুন রাষ্ট্রের কাঠামো তৈরি করার চেষ্টা করছিল।
ইরাকের পুনর্গঠন বিভিন্ন কারণ দ্বারা অসুবিধাগ্রস্থ হয়েছিল:
২০০৫ সালে ইরাকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, যার ফলস্বরূপ একটি নতুন সংবিধান গৃহীত হয়। এই ঘটনাটি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল, তবে এটি ছাড়াই জটিলতা ছিল।
সেই সময় থেকে ইরাকে কয়েকটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা বিভিন্ন সরকার গঠনের দিকে নিয়ে গেছে। কিন্তু অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ এবং ক্ষমতার জন্য লড়াই বিষয়টি এখনও প্রাসঙ্গিক ছিল। শিয়া, সুনি এবং কুর্দিদের মধ্যে জটিল সম্পর্ক স্থিতিশীলতার জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল।
২০১৪ সালে ইরাক একটি নতুন হুমকির সম্মুখীন হয়—সন্ত্রাসী সংগঠন "ইসলামিক স্টেট" (আইএসআইএস) এর উত্থান। এই গোষ্ঠীটি দেশে উত্তরে এবং পশ্চিমে বৃহৎ এলাকা দখল করে, মসুল শহরসহ।
ইরাকি সরকার আন্তর্জাতিক সহযোগীদের সঙ্গে মিলে আইএসআইএস-এর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে। ২০১৭ সালে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বিজয়ের ঘোষণা দেওয়া হয়, তবে এই যুদ্ধে পরিণতি আজও অনুভূত হচ্ছে।
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের সাফল্যের পরেও, ইরাক অনেক সমস্যার মুখোমুখি হয়। দেশের অর্থনীতি এখনও তেলের রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল, যা বিশ্ব বাজারের দামের পরিবর্তনের প্রতি দুর্বল করে তোলে।
অর্থনৈতিক সমস্যাদির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত:
শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবায় প্রবেশাধিকারের অভাব সহ সামাজিক সমস্যা ইরাকিদের জীবনযাত্রার মানকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে থাকে। শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা পরিস্থিতি উন্নতির জন্য জরুরি সংস্কারের প্রয়োজন।
ইরাক আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে রয়ে গেছে। দেশটি নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক মজবুত করতে বিভিন্ন রাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সক্রিয় যোগাযোগ পরিচালনা করছে।
ইরাক প্রতিবেশী দেশগুলো যেমন ইরান, তুরস্ক এবং আরব দেশগুলোর সঙ্গে তাদের সম্পর্ক মজবুত করছে। এই সহযোগিতা নিরাপত্তা, অর্থনীতি এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রকে আচ্ছাদন করে।
অসহযোগিতার মধ্যেও, ইরাকের উন্নয়নের জন্য সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ, তরুণ জনসংখ্যা এবং মধ্য প্রাচ্যে কৌশলগত অবস্থান রয়েছে।
নিজের সম্ভাবনা বাস্তবায়নের জন্য, ইরাককে প্রয়োজন:
২১ শতকে ইরাক একটি দেশ যেখানে গভীর পরিবর্তন ঘটছে। যতোই চ্যালেঞ্জ আসুক, ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য সম্ভাবনা বিদ্যমান। স্থিতিশীল উন্নয়ন, স্থায়িত্ব এবং সামাজিক ন্যায় বাণিজ্যিক সফল ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত হয়ে উঠবে।